হাড়ের ক্যালশিয়াম নষ্ট হওয়ার জন্য দায়ী এই ৫ খাবার, সচেতন হোন
হাড়ের সমস্যা দূরে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কয়েকটি খাবার রয়েছে যা অসুখের কারণ। আর কিছু রয়েছে যা রোগ থেকে বাঁচাতে পারে। রোগের সবদিক সম্পর্কে জানালেন এইমস-এর চিকিৎসক।
শরীরের সম্পূর্ণ ওজন গিয়ে পড়ে হাড়ের উপর। তাই হাড় শক্ত থাকা সবার আগে জরুরি। হাড় মজবুত থাকলে দেখবেন দেখবেন অনায়াসে বহু সমস্যার প্রকোপ কমছে। তবে শুধু শরীরকে সাপোর্ট দেওয়াই নয়, এছাড়া মাথা, ফুসফুস, হৃৎপিণ্ডের মতো অঙ্গকে রক্ষা করে হাড়।
মনে রাখবেন, এই অঙ্গের কোনও ক্ষতি হলে আপনার জীবনে নেমে আসবে গাঢ় অন্ধকার। এক্ষেত্রে অস্টিওপোরোসিস থেকে শুরু করে বোন ক্যানসার হতে পারে। এমনকী অনেকের তো হাড়ের সংক্রমণ পর্যন্ত হয়।
মনে রাখতে হবে যে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের উপর অনেক কিছুই নির্ভর করে। সেক্ষেত্রে সুষম খাবার মুখে তুললেই বহু অসুখ থেকে বাঁচা সম্ভব। তাই অহেতুক দুশ্চিন্তা না করে বরং খাবারের তালিকায় সঠিক উপাদান রেখে হাড়ের স্বাস্থ্য বজায় রাখুন।
ক্যালশিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি হাড় সুস্থ রাখার জন্য প্রয়োজন। এই সকল উপাদান আপনি পাবেন খাবার থেকে। তবে আমাদের অসচেতনতাই সমস্যা তৈরি করে।
নুন বেশি খেলেই বিপদ…
নুন অল্প পরিমাণে খেলে তেমন একটা সমস্যা নেই। তবে অনেকে নিয়মিত বেশি লবণ দেওয়া খাবার খান। এই বদভ্যাস শরীরে জটিলতা তৈরি করে। এশিয়া পেসিফিক জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, চিনে বেশি পরিমাণে নুন খাওয়া অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই অস্টিওপোরোসিস বেশি পরিমাণে দেখা গিয়েছে। এই অসুখটিতে হাড় ক্ষয়ে যায়। ছোটখাট চোট লাগলেই সমস্যা। তাই বাঁচতে চাইলে খাবারে নুন কম দিন।
মিষ্টি খেলেই মুশকিল
মিষ্টি বেশি খেলেই আপনার শরীরে সমস্যা তৈরি হতে পারে। এই খাবারটি ডায়াবিটিসের মতো জটিল অসুখের কারণ। এমনকী ওজন বাড়াতে পারে দ্রুত গতিতে। যদিও সুগার বেশি পরিমাণে খাওয়ার সঙ্গে হাড়ের সরাসরি কোনও যোগ নেই। তবে দেখা গিয়েছে যে আপনি যদি এই খাবারটি অত্যধিক পরিমাণে খান তবে পুষ্টির ঘাটতি হয়। তখন শরীরে তৈরি হয় জটিলতা। তাই হাড়ের ক্ষয় হয় পরোক্ষভাবে। ফলে মিষ্টিমুখ করার আগে সাবধান।
সোডা, কফি বিষের সমান
২০১৪ সালে আমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মহিলা যাঁরা প্রতিদিন সোডা খান, তাঁদের কোমরের হাড়ে চিঁড় ধরার আশঙ্কা বেশি ছিল। ২০১৬ সালের অপর একটি গবেষণা আবার বলছে, কফির মধ্যে থাকা ক্যাফিন সমস্যা তৈরি করে। এই পানীয় মুখে তুললে বোন ডেনসিটি কমে যায়। তাই সচেতন থাকাটা সবার আগে জরুরি। তবেই ভালো থাকতে পারবেন।
মদ্যপানেই সমস্যা
বিএমজে-এর একটি গবেষণা বলছে যে,মদ্যপান হাড়ের ক্ষয়ের কারণ। প্রতিদিন অনেকটা মাত্রায় মদ খেলে এই সমস্যা হয়। এমনকী এদের ফ্র্যাকচার হওয়ার আশঙ্কাও বাড়ে। এছাড়া বেশি পরিমাণে রেডমিট খেলেও হাড়ের ক্ষয় হয়। তাই এই ধরনের খাবারের লোভ থেকে নিজেকে মুক্ত করতে হবে। তবেই বাঁচতে পারবেন।
হাড়ের শক্তি বাড়ান
এইমসের চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা শেরাওয়াতের মতে, প্রতিদিন ৫০০ থেকে ১০০০ এমজি ক্যালশিয়াম প্রয়োজন। এই চাহিদা পূরণ করতে আপনাকে খেতে হবে দুধ থেকে শুরু করে দই, সোয়াবিন, পনির ও রাগি। তবেই হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো থাকতে পারে।
ভিটামিন ডি প্রয়োজন
হাড়ের স্বাস্থ্য ফেরাতে চাইলে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি মেটাতে হবে। এই ভিটামিন ক্যালশিয়ামকে হাড়ে প্রবেশ করাতে সাহায্য করে। আপনি সূর্যের আলো থেকে এই ভিটামিন পেতে পারেন। এমনকী মাছ, লেবু, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারে অনেকটা পরিমাণে এই ভিটামিন পাবেন।
ব্যায়াম করুন
হাড়ের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। দিনে ৩০ মিনিট ব্যায়াম চাই-ই চাই। এছাড়া ব্লাড সুগার থেকে শুরু করে ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। নিয়মিত ওষুধ খান। এভাবেই সুস্থ থাকতে পারবেন। আর কোনও সমস্যা হলে প্রথমেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
বিদ্র: প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।